বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:ফের বাংলার তৃণমূল সরকারকে খোঁচা রাজ্যপালের। শুধু খোঁচাই দিলেন না, সরকারের পুলিশের ওপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার একটি টুইটে তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে লেখেন, এই রাজ্যে পুলিশের আচরণ পুরোপুরি দলদাসের মতো। বিরোধী দলগুলির নেতা ও নেত্রীদের সঙ্গে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি এ বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যাও চেয়েছেন তিনি।
রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়েই সরকারের আচরণ নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যপালের পাল্টা সমালোচনাও করেছেন শাসক দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। এমনকী, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও অনেকবার নিজের বিরক্তি চেপে রাখতে পারেননি। রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে কড়া চিঠি আদান–প্রদানের ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু কোনও ভাবেই রাজভবনকে চুপ করিয়ে রাখতে পারছে না নবান্ন। বৃহস্পতিবারও রাজ্যপালকে ফের সরব হতে দেখা গেল একটি ভিডিও বার্তায়। সেই বার্তাটি টুইট করে তিনি লেখেন, ‘বিরোধী দলগুলির নেতা–নেত্রী থেকে সাংসদ ও বিধায়কদের ওপর যে ভাবে পুলিশ অত্যাচার ও জুলুমবাজি করছে, তা মানা যায় না। পুলিশের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে না তারা পুলিশ। মনে হচ্ছে, তারা যেন শাসক দলের কর্মীই।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘গণতন্ত্রে এমন ব্যাপার সমর্থন করা যায় না। বরদাস্তও করা যায় না। রাজ্যের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভেঙে পড়েছে, সে বিষয়ে সন্দেহের আর কোনও অবকাশ নেই। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনার জন্য ডেকেছি। তাঁর কাছ থেকে এ ব্যাপারে সরাসরিই আমি সবকিছু শুনতে চাই।’ উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন, কোনও রকম সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছে। সেই সময় বিজেপির তরফেও অভিযোগ করা হয়েছিল, সাংসদ অর্জুন সিং এবং তাঁর ছেলে বিধায়ক পবন সিংকে এনকাউন্টার করে খুনের ছক করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা, রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার–সহ অনেক বিরোধী নেতা–নেত্রীই রাজ্যপালের কাছে পুলিশের আচরণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। আমফান বিপর্যয়ের সময় সিইএসসি–র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তা অবরোধ করে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন বলেও অভিযোগ করেছিলেন চাঁপদানির কংগ্রেস বিধায়ক আবদুল মান্নান। ওই ঘটনার কথা রাজ্যপালকে চিঠি লিখেও জানিয়েছিলেন মান্নান। সবার অভিযোগের ভিত্তিতেই এই টুইট করেছেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। অবশ্য রাজ্যপালের অভিযোগের জবাবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।